ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে রাজনীতিতে উত্তাপ
- আপলোড সময় : ২৩-১০-২০২৫ ০৩:১০:০৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৩-১০-২০২৫ ০৩:১০:০৯ অপরাহ্ন
* নির্বাচনের আগে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ভ্রান্ত তথ্য : প্রধান উপদেষ্টা
* ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা : প্রধান নির্বাচন কমিশনার
* রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নাই : টুকু
* জামায়াতের ক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না : নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের শুরুতেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরইমধ্যে নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনীতিতে জোটভিত্তিক ভোট নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা এবং মিল-অমিল। কৃষক-শ্রমিক ও জনতা থেকে শুরু করে সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা প্রতিদিন গ্রাম-গঞ্জে কিংবা শহরের অলি-গলির চায়ের টেবিলে সরব রয়েছেন দেশের রাজনীতি নিয়ে। অনেকেই বলছেন, সামনের দিনগুলোতে রাজনীতির মাঠে কী হবে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি অপেক্ষায় রয়েছে-একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। আর জামায়াত রাজপথে সরব রয়েছে পিআর পদ্ধতির দাবি আদায়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন নিয়ে। তবে জুলাই সনদের আইনিভিত্তির দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলনে হুমকি দিয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র-জনতার গড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সবমিলিয়ে আওয়ামীবিহীন রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন ইস্যুতে ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে ‘রাজনীতিতে’ মৃদু উত্তাপ বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট্ররা বলছেন, ত্রিমুখী দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচনে রাজনীতির মাঠে কী হচ্ছে। এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে দেশের নাগরিকদের মধ্যে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত ৫ আগস্টে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা হটাও আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নানা ইস্যুতে ঐক্যে বিভাজন দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের হিসাব-নিকাশ যত এগিয়ে আসছে, দলগুলোর মধ্যে বিরোধ ততই প্রকাশ্যে রূপ নিচ্ছে। ফলে রাজনীতির মাঠে অনৈক্যের সেই সুর ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। দীর্ঘদিন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ভোটের অধিকারসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে যারা রাজপথে শামিল ছিলেন, তারাই কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথে বাধা হচ্ছেন-এমনটিও ভাবছেন নগরবাসি। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরবিরোধী অবস্থান, বিচার-সংস্কার ও নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। যদিও সরকার ও নির্বাচন কমিশিন ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সর্বশেষ অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ভ্রান্ত তথ্য বা বিভ্রান্তি ছড়ানো এখন নির্বাচনের আগে আমাদের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। তবে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দময় করতে সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বুধবার বাংলাদেশে নবনিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোৎসে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রিত করে জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর করিয়ে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে। এটি ছিল ঐক্য ও পরিবর্তনের প্রতি সম্মিলিত অঙ্গীকারের এক অনন্য মুহূর্ত, যা নির্বাচনের আগে পারস্পরিক বিশ্বাস গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। সরকার ও ইসির কথায় সাধুবাদ জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ভোটমুখী হচ্ছিল। এরইমধ্যে গত ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ রাজনৈতিক দলগুলো। কিন্তু ওই সনদে স্বাক্ষর করেননি এনসিপি। বিশেষ করে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) নিয়ে কৌতূহলটা বেশি। গণ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া দলটি এককভাবে নির্বাচন করবে না কোনো জোটের সঙ্গে অংশ নেবে তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। এনসিপির কিছু নেতা এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে, আবার অনেকে জোটে যাওয়ার পক্ষেও মত দেন। কেউ বিএনপির সঙ্গে জোটে যাওয়ার পক্ষে কথা বলছেন, আবার কারও পছন্দ জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা। শেষ পর্যন্ত যদি জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে বিএনপি নাকি জামায়াত-কার সঙ্গে যাবে, সেটাও দলটি কষছে। এই দ্বিধার মধ্যে এনসিপি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। তরুণদের নিয়ে গড়া দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা বলেন, বিএনপি ও জামায়াত দুটি জোটের সঙ্গেই নির্বাচনী জোট বা সমঝোতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে লাভ-ক্ষতির হিসাব কষছে দলটি। তবে এনসিপির একটি পক্ষের মত হচ্ছে, জামায়াতের সঙ্গে সরাসরি জোট না করে নির্বাচনী সমঝোতায় যাওয়া। অপর পক্ষটির আগ্রহ রয়েছে বিএনপির সঙ্গে একই কায়দায় নির্বাচনী আসন ভাগাভাগি বা জোটের যাওয়ার। এ নিয়ে দুটি দলের সঙ্গেই অনানুষ্ঠানিক আলোচনাও চলছে বলে জানা গেছে। তবে দলটির কোনো কোনো নেতার মত হচ্ছে-বিএনপি বা জামায়াত কোনো জোটে না গিয়ে একক কিংবা এনসিপির নেতৃত্বে আলাদা জোট করে আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়া। যদি শেষ পর্যন্ত পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ গঠনের ব্যাপারে ঐকমত্য তৈরি হয় তাহলে কোনও জোট ছাড়াই এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে এনসিপি। এ বিষয়ে কথা হয় এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এরসঙ্গে। তিনি বলেন,আমরা কারো সঙ্গে জোটে যাচ্ছি নাকি বা এককভাবে নির্বাচন করব সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো হয়নি। আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করছি। এনসিপি গঠনের পর থেকেই দলটির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর এক ধরনের সখ্যতা দেখা গিয়েছিল। এর বিপরীতে বিএনপির সঙ্গে এক ধরনের বৈরী সম্পর্কও দেখা গেছে। কিন্তু সম্প্রতি জুলাই সনদ স্বাক্ষর ঘিরে জামায়াতের সঙ্গে এক ধরনের টানাপোড়েনও তৈরি হয়েছে এনসিপির। যা স্পষ্ট হয়ে গত রোববার এনসিপির শীর্ষ নেতা নাহিদ ইসলামের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, এখন এনসিপি যদি রাজনৈতিক দল হিসেবে দাঁড়াতে চায় তাদের কৌশল হওয়া উচিত এককভাবে নির্বাচন করা। তবে চাইলে তারা দুয়েক জায়গায় আসন সমঝোতাও করতে পারে। রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই সনদ কিংবা রাজনৈতিক নানা ইস্যুতে গত কয়েক মাস ধরেই রাজনীতির মাঠে বিএনপির সঙ্গে এনসিপির এক ধরনের টানাপোড়েন দেখা গেছে। এ নিয়ে প্রকাশ্যে সভা সমাবেশে এনসিপি নেতাদেরও অনেককে বিএনপির সমালোচনাও করতে দেখা গেছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতাদেরও অনেককে এনসিপির সমালোচনা করতে দেখা গেছে নানা ইস্যুতে। বিশেষ করে সংস্কার ইস্যুতে বিএনপি ও এনসিপির মতপার্থক্য দল দুটির মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরো বাড়তে থাকে। বিএনপি নেতাদের অনেককে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা ছাত্র উপদেষ্টাদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যও করতে দেখা গেছে বিভিন্ন সময়। আবার দেশের কোথাও কোথাও এনসিপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে হামলা কিংবা বাধা দেওয়ারও অভিযোগও উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। সর্বশেষ সংস্কারের বেশ কিছু ইস্যুতে বেশ মত পার্থক্য দেখা গেছে বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে। একদিকে এই দুটি দলের মধ্যে যখন সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে তখন পর্দার আড়ালে বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা কিংবা জোট গঠনের আলোচনার কথাও বলেছে দলটির নেতাদের কেউ কেউ। তবে এনসিপির কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে এনসিপি নেতাদের মধ্যে দুই ধরনের অবস্থান আছে। দলের যে পক্ষটি বিএনপির সঙ্গে জোট গঠনের পক্ষে তাদের মত হচ্ছে, নির্বাচনে যদি বেশি সংখ্যক আসন ছাড় দেওয়া হয় তাহলে বিএনপির জোটে যেতে আগ্রহী তারা। সেক্ষেত্রে এনসিপির প্রত্যাশা অন্তত ৩০ থেকে ৪০টি আসনে বিএনপি ছাড় দেয়, তাহলে তারা বিএনপি জোটে কিংবা বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতায় যেতে রাজি। আর অন্য পক্ষটির বক্তব্য হচ্ছে, নির্বাচনে বিএনপি আসন ছাড় দিলেও দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কোনো কোনো আসনে বিএনপি নেতাদের কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করতে পারে। যেটি এনসিপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
এ বিষয়ে এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, আপাতত বিএনপির সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা কোন বিষয়েই সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে শেষ পর্যন্ত এনসিপির সঙ্গে জোট বা সমঝোতার সুযোগ আছে সেটি বলছেন বিএনপির নেতাদের কেউ কেউ। এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে দুই দলের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগও হচ্ছে বলে জানা গেছে। কথা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এরসঙ্গে। তিনি বলেন, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নাই। নির্বাচনের আগে মাঠের পরিস্থিতি দেখেই তখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, গত মাসের মাঝামাঝিতে জামায়াতসহ ছয়টি দল পাঁচটি অভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নামে। তখন সেই আন্দোলনে এনসিপিরও থাকার কথা ছিল। তবে দাবি নিয়ে মতবিরোধ তৈরির পর বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মতপার্থক্য তৈরি হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জামায়াতের যোগ দেওয়া কিংবা বাস্তবায়ন কোন প্রক্রিয়ায় হবে তা নিয়ে জামায়াত ও এনসিপির টানাপোড়েনও তৈরি হয়। সর্বশেষ পিআর বা আনুপাতিক নির্বাচনের দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনকে সুচিন্তিত রাজনৈতিক প্রতারণা বলে মন্তব্য করে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে পোস্ট দেন। তার পাল্টা জবাবও দিতে দেখা যায় জামায়াত নেতাদের। এমন পরিস্থিতির মধ্যে জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা কিংবা জোট গঠনের সম্ভাবনা কতটুকু তা নিয়েও নানা আলোচনা চলছে। এমনও হতে পারে আমরা এককভাবে বা স্বতন্ত্র জোট করে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে পারি। এমনও অনেকে আছে যারা এনসিপির রাজনীতি এখনো করছেন না, তবে ভোটের মাধ্যমে তাদের কেউ এনসিপিতে এনসিপিতে আসতে চায়। সেই বিষয়টিও আমাদের মাথায় আছে। এনসিপির একটি পক্ষের অবস্থান, নির্বাচনের মাঠে জামায়াতের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা হলে সেক্ষেত্রে বেশি আসন ছাড় দিতে পারে জামায়াত। অন্যদিকে জামায়াতের ক্ষেত্রে বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটে অংশ নেবে না বলেও মনে করে একটি পক্ষ। যে কারণে দলটির কোনো কোনো নেতা বিএনপির চাইতে জামায়াতের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়ে আগ্রহী। আর অন্য পক্ষটির মতামত হচ্ছে-শেষ পর্যন্ত যদি জামায়াতের সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে নির্বাচনে অংশ নেয় এনসিপি, তাহলে বিরোধী দলে অবস্থান হতে পারে দলটির। অন্যদিকে, জামায়াতের রাজনীতির ট্যাগও দলটিকে পিছিয়ে দিতে পারে। সেই দিক বিবেচনা করে ওই পক্ষটি জামায়াতের সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতার বিষয়ে কিছুটা দ্বিধা দ্বন্দ্বে রয়েছে। বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা ছাত্র উপদেষ্টাদের একজন জামায়াতের সঙ্গে জোট বা সমঝোতায় না যাওয়ার পক্ষেও তার অবস্থানের কথা এনসিপিকে জানিয়েছে বলে দলটির এক নেতা জানান। তবে এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, জামায়াতসহ একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে, এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্তই হয়নি কার সঙ্গে এলায়েন্স হবে। কার সঙ্গে যাব সেই সিদ্ধান্ত হলেই তারপর না হয় আসন নিয়ে দরকষাকষি হলেও হতে পারে। সাম্প্রতিক টানাপোড়েন থাকলেও সংস্কার ইস্যুতে জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে বেশ কিছু ইস্যুতে মতৈক্য রয়েছে। শেষ পর্যন্ত সেটি নির্বাচনী সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। কথা হয় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের এর সঙ্গে। তিনি বলেন, আর কিছুদিন পরই স্পষ্ট হবে কে কোন জোটে বা কার সঙ্গে সমঝোতায় যাবে। এনসিপির সঙ্গে সমঝোতা বা জোট গঠনের সুযোগ তো আছেই। আমরা আলোচনা করছি আমাদের মধ্যে মতবিনিময়ও হচ্ছে। তবে সর্বশেষ জামায়াতের ক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না,এমন মন্তব্য করে সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছেন এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। গত মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ কথা লিখেন তিনি। তিনি লেখেন, তারা যতবার ইতিহাসের মঞ্চে ফিরে আসতে চেয়েছে, ততবারই জনগণের অন্তর থেকে প্রতিধ্বনি উঠেছে। এই দেশকে আর অন্ধকারে ফেরানো যাবে না। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, জামায়াতের রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাদের রাজনৈতিক দর্শন ও অতীত আচরণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মানচিত্র ও জাতীয় চেতনার পরিপন্থী।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
সফিকুল ইসলাম